মায়ের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে


আজ প্রভাতের শিশির যেন অশ্রু ঝরে,

একটি বছর পেরোলো মা, তোমার না থাকার ভোরে

তুমি ছিলে মর্ত্যের আকাশে শুভ্রতার ধ্রুবতারা,

তোমার স্পর্শে খিলান বাঁধা, আমার জীবনের ছায়াতল সারা।

 

তোমার বেদনাহীন কোলে, ছিল দিন কাটানোর শান্তি,

এখন নিস্তব্ধ অরণ্যে যেন হারিয়েছে সেই কান্তি।

তুমি ছিলে আমার হৃদয়-কমল, তোমার হাসি ছিল রবি,

তোমার অনুপস্থিতিতে এ জীবন, শুধুই এক শূন্য প্রতিচ্ছবি।

 

আজও বাতাসে ভেসে আসে, তোমার সেই মায়ার গন্ধ,

তোমার আদরে ছিল গঙ্গার তরঙ্গে শুদ্ধতা অমন্দ।

তুমি ছিলে সময়ের স্রোতে, আমার অদৃশ্য ভেলা,

আজ তোমার স্মৃতির ঢেউয়ে, হৃদয় ডোবে, উঠে, খেলা।

 

তোমার স্নেহের ঢেউ, নিঃশব্দে ভাসিয়ে নিয়ে যেত,

আজ সেই ঢেউ থেমে গেছে, নিস্তব্ধ সমুদ্রের মতো-

এখন আকাশটা খোলা, কিন্তু বৃষ্টি নেই, রোদ নেই, কেবল শূন্যতা,

তল খুঁজে না পাওয়া এক গভীরতা, শুধু এক অব্যক্ত নীরবতা।

 

তোমার গন্ধ ভেসে আসে পুরনো দিনগুলোর মতো—

সেই নদীর স্রোত, যা ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়, শূন্যতায়,

তোমার হাতে ছিল জীবনের মানচিত্র,

আজ পাথেয় নেই, তবু পথ চলছি—বিধ্বস্ত পায়ে।

 

তোমার অভাবটা এক শূন্য ক্যানভাস,

যেখানে স্মৃতিগুলো রং ছড়ায় পরম মমতায়-

তুমি আছো, ছিলে, থাকবে—অনন্তকাল,

তুমি আছো প্রতিটি রঙে, প্রতিটি শীতে-গ্রীষ্মে,

তুমি আছো এই নীরব স্রোতে, প্রতিটি নিঃশ্বাসে,

সময়ের গণ্ডির বাইরে, স্নেহের অদৃশ্য স্পর্শে,

তুমি আছো আমার হৃদয়ের গভীরে, শিকড়ের মতো—

যা কোনোদিন ছিঁড়ে যাবে না, চিরকাল থাকবে মাটির তলাতল।

 

লন্ডন, ৫ই অক্টোবর