আমি আবারো সম্ভব হবো
আমি আবারো উদ্ভাসিত হবো
আমি আবারো উজ্জীবিত হবো এই বাংলায়
যেখানে কৃঞ্চচূড়ার গায়ে রক্ত জমে আছে
সেই কতো কাল-
যেখানে ঊষার লগনে পূর্ব গগনে
রক্তের মেলা বসে প্রতিদিন
কৃঞ্চচূড়ার লালাগু সারা গায়ে মেখে
আমি যোগ দেবো ফাগুনের প্রভাত ফেরীতে
আমার দ্বীপ্ত পদভারে কেঁপে উঠুক স্তব্দ শীতল মাটি
উদ্ধত কন্ঠে বেঁজে উঠুক বায়ান্নের সেই অমর সংগীত-
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভূলিতে পারি—"
আমি যে আজ কিছুই পারি না
আমি যে সভ্যতার জঠরে বেড়ে উঠা
এক অসভ্য নবজাত অক্ষমতা
আমি যে নপুংশক, অন্ধ-ভয়
মেরুদন্ডহীন পাষন্ড বর্বরতা
আমি যে না জানা বাঁচার অন্ধ আগ্রহ
আমি যে সময়ের বিষাক্ত বিষদাঁত
অসুস্থ পান্ডূর আর রোদেলার কান্না
আমাকে যে জাগতে হবে
উদ্ধত বলিষ্ঠ কন্ঠে আবারো উচ্চারিত হোক
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবির অমর কবিতা খানি
সংঙ্গীতের মূর্ছনায় আন্দোলিত হোক
টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া।
আমি আবারো সম্ভব হবো
আমি আবারো উদ্ভাসিত হবো
এই বাংলায়,
যেখানে সমগ্র গাছ গাছালী তাদের
সমস্ত রক্ত জমা করে রেখেছিলো একদিন
কৃঞ্চচূড়া আজো সেই রক্ত বুকে ধরে আছে
আর সেই জমানো রক্ত
ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে
আমি সেই কৃঞ্চচূড়ার লালাগু সারা গায়ে মেখে
খালি পায়ে হেঁটে বেড়াবো
জীবনানন্দের এই কাক-শালিকের দেশে।
আমি এখানেই এই বাংলার শ্যামল মাটিতে
আবারো সম্ভব হবো
যেখানে চির নিদ্রায় শুয়ে আছে
সালাম-জব্বার-রফিক-সফিক এর মতো বীর তরুনেরা
যেখানে পরম সুখে শুয়ে আছেন
আমাদের পিতা
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মহান পুরুষ,
বাংলার বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
যার আকাশে -বাতাসে হিন্দোলিত হয় প্রতিনিয়ত
দ্রোহ আর ভালোবাসার
সেই নন্দিত কবিতাার বলিষ্ঠ শব্দ---
“এই বারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম
এই বারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”।
এই খানেই এই মাটিতে শুয়ে আছেন
কি গভীর মৌনতায়
গনতন্ত্রের সাহসী সৈনিক নুর হোসেন।
আমি আবারো সম্ভব হবো
আমি আবারো উদ্ভাসিত হবো
এই বাংলায়,
যে মাটিতে সম্ভব হলে
পারার আগ্রহ বেড়ে যায়,
রক্তের রন্দ্রে রন্দ্রে বেজে উঠে
এশিয়া-আফ্রিকা আর ল্যাটিন আমেরিকার
মেহনত মানুষের বিস্ফোরিত কন্ঠস্বর
মায়ের অবয়বে ফুটে উঠে
সারা পৃথিবীর সৌন্দর্য
পিতার বলিষ্ঠ বুকে খুঁজে পায়
সন্তানেরা নিরাপদ আশ্রয় স্থল
সেই বাংলায়
নাটোরের বনলতার দেশে
আমি সম্ভব হবো।
কৃঞ্চ দ্বাদশীর ঘুট ঘুটে অন্ধকার থেকে
আমি আবারো উদ্ভাসিত হবো
আমি আবারো সম্ভব হবো।