আমার খুব লজ্জা হয়, আমার ভীষণ ঘৃণা হয়,
যখন দেখি বিশ্ব বেহায়ারা চারপাশে অমঙ্গলের বিষ্ঠা ছড়ায়,
শকুনের দল ঘুরে বেড়ায় রাস্তায়, বুকের রক্ত নিয়ে নাচে,
আর আমরা নির্বাক দাঁড়িয়ে আছি, নিরুপায় বোধে আবদ্ধ।
আমার খুব লজ্জা হয়, আমার ভীষণ ঘৃণা হয়,
কৃষক চেয়ে থাকে আকাশের দিকে, ফসলের আশা বিলীন দৃষ্টিতে,
ক্ষুধার জ্বালায় ঋণের বোঝা বাড়ে, মাটির কান্না কেউ শুনে না,
শ্রম আর স্বপ্ন আজ মিথ্যের জালে বন্দী, কেউ তা কিনে নেয় বেচা-কেনায়।
আমার খুব লজ্জা হয়, আমার ভীষণ ঘৃণা হয়,
শিক্ষকেরা নতজানু, ছাত্রের চোখে জ্বলে অবজ্ঞার অগ্নি,
বই নয়, তাদের হাতে তাচ্ছিল্যের শিখা, গর্বের কুৎসিত হাসি,
বিদ্যার আলো তুচ্ছ করে মিথ্যার পথে যাত্রা শুরু করেছে তারা।
আমার খুব লজ্জা হয়, আমার ভীষণ ঘৃণা হয়,
প্রতিটি পাটাতনে শহীদের স্মৃতি, রক্তের দাগে ভেজা,
যে ভালোবাসা ছিল দেশের জন্য, আজ তা ভাঙা সেতুর মতো ধুলায় মিশেছে।
দেশপ্রেমিকের নাম খসে পড়ে শোকবার্তায়—
এই কি তবে স্বাধীনতার দাম? এই কি মুক্তির প্রতিচ্ছবি?
আমার খুব লজ্জা হয়, আমার ভীষণ ঘৃণা হয়,
যখন দেখি স্বপ্নের মাঠে নির্লজ্জেরা বিষবৃক্ষ রোপণ করে নির্দ্বিধায়,
ভালোবাসা খুঁজতে পথে নামলেও অসুরেরা ছড়িয়ে দেয় রঙিন কলঙ্ক,
হাজারো কষ্টের ভিড়ে যারা বাঁচতে চায়, তাদেরও ঠাঁই নেই,
তাদের লড়াই অসহায়ত্বের ব্যথায় মিশে যাচ্ছে ধুলোর সঙ্গে।
আমার খুব লজ্জা হয়, আমার ভীষণ ঘৃণা হয়,
দেখি এই দেশ অন্ধকারের বৃষ্টিতে ভিজছে প্রতিনিয়ত,
শান্তির আলোয় পথ খুঁজে ফিরছে ক্লান্ত মানুষ,
কিন্তু দুঃস্বপ্নের নাগপাশ ছেড়ে যাওয়ার নয়,
কোথায় যাবো, কাকে বলবো?
এই ব্যথার গান কি শুনবে কেউ, নাকি সবই মিশে যাবে ধুলোর ঘূর্ণিপাকে?
৫ই নভেম্বর, ২০২৪