পশ্চিমা উদারতাবাদ নিয়ে এইটা আমার দ্বিতীয় লেখা। আগের লেখায় এর উৎপত্তি এবং প্রসার সম্পর্কে আলোকপাত করেছিলাম। যদিও উদারতাবাদের বেশ কিছু সামাজিক দর্শন মানব কল্যানের সহযোগী তবে এর অতিরিক্ত প্রয়োগ এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রে জোরপূর্বক ব্যাবহার সমাজ এবং মানব কল্যানের পরিপন্থী হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ সাড়া বিশ্বে যে সামাজিক অবক্ষয়, দূর্বৃত্তায়ন, অভূতপূর্ব অপরাধ, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, যুদ্ধংদেহী রাষ্ট্রীয় মনোভাব এবং সামাজিক উন্মাদনা তার সব কিছুর জন্যই সবচেয়ে বেশী দায়ী পশ্চিমা উদারতাবাদ। নব্বইর দশকের আগে বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের আগে বিশ্ব মূলতঃ পূঁজিবাদী এবং সমাজতান্ত্রিক বলয়ে বিভক্ত ছিলো। যদিও শীতল যুদ্ধের ভয়ানক পরিস্থিতি ছিলো ব্যাপক কিন্তু বিশ্বব্যাপী সামাজিক অস্থিতিশীলতা ছিলো সহনীয় পর্যায়ে এবং কোথাও কোথাও থাকলেও তা ছিলো স্থানীয় পর্যায়ে। বর্তমানে বিশ্বায়ন আর অভূতপূর্ব প্রযুক্তির অগ্রগতির রোষানলে বিশ্ব আজ মারাত্মকভাবে দিশেহারা। অতিরিক্ত স্বাধীনতা, ব্যাক্তিগত অধিকার, মানবাধিকার, গনতন্ত্র আর বাক স্বাধীনতার গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে চলেছে সাড়া বিশ্ব লাগামহীম ভাবে। সবকিছুতেই মানুষের আজ পূর্নাঙ্গ স্বাধীনতা আর উন্মুক্ততা। তাই আজ নিউ ইয়র্কের অলিতে গলিতে ভেসে বেড়ায় গাঁজা আর মারিজুয়ানার অসহ্য গন্ধ, মানষিক বিকারগ্রস্থ মানুষের উন্মাদনা, স্বাধীনতার নামে সাড়া বৃটেন জুড়ে দেখতে পাই “আমার শরীর আমার অধিকার” এর নামে রাস্তায় রাস্তায় সোরগোল আর ইউরোপের রাজধানী শহরগুলিতে পোশাকহীন মেয়েদের যুদ্ধবিরোধ প্রতিবাদ। কি অসহ্য উদরতাবাদের অনৈতিক উন্মাদনা! যেখানে গোপনীয়তা বলে কোন বালাই নেই সেখানে আবার গোপনীয়তা রক্ষার লজ্জাহীন প্রতিবাদ।
আজ সাড়া বিশ্বে শুধু সামাজিক অস্থিতিশীলতাই নয়, গত তিন দশক ধরে যে রাজনৈতিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে অস্থির, প্রতিকূল, অনিশ্চিত বিপদজ্জনক অভুতপূর্ব পরিবর্তনের বৈরী বাতাসের তীব্র সুনামি বয়ে চলেছে তাও এই পশ্চিমা উদারতাবাদেরই পরিনতি। সমাজতন্ত্রকে ধ্বংশ করার নীল নকসা যারা তৈরী করেছিল, বিশ্বায়ন আর উদারতাবাদের বিষ বাস্প সমাজে ছড়িয়ে দিয়েছিলো তারা আজ বিশ্বের শ্রেষ্ট ধনীদের কাতারে। শুধু বিশ্বের লক্ষ্য কোটি মানুষ পড়ে রইলো এখনো সমাজের প্রান্তিক সীমানায় দূর্ভাগ্যের গ্লানি নিয়ে। সমাজতন্ত্রের সুফলতা যারা ভোগ করেন নাই তারা কখনো সমাজতন্ত্রের মানবীয় এবং সমৃদ্ধের দর্শন অনুধাবন করতে পারবেন না। সমাজতন্ত্র দিয়েছে নৈতিক শিক্ষা আর পূঁজিবাদের উদারতা তৈরী করেছে শিক্ষার বানিজ্যকরন, সমাজতন্ত্র তৈরী করেছিলো এমন একটি সমাজব্যাবস্থা যা ছিলো সমাজের পাঁচটি মৌলিক অধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত(অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, সেবা এবং বাসস্থান), যার দর্শন ছিল ভাতৃত্ব, শ্রদ্ধা আর সামাজিক ন্যায় নীতির প্রয়োগ। অথচ পুঁজিবাদের বধ্যভূমি পশ্চিমা দেশগুলিতে অতিরিক্ত উন্মাদপূর্ন স্বাধীনতা, গনতন্ত্র আর ব্যাক্তি অধিকারের লাগামহীন প্রয়োগ ছাড়া আর কোন কিছুরই সন্ধান নেই। আছে শুধু যেমন খুশি তেমন সাজার মতো অনৈতিকতা আর সামাজিক বিকারগ্রস্থতা।। গুন্টার গ্রাস কলকাতাকে নিয়ে যে দ্রুপদীয় উক্তি করেছিলেন “এখানে সব আছে, শব্দ দুষন, চূর্ন-বিচূর্ন এলো মেলো শহর মলমূত্র ভরা কিন্তু তার পরেও মধ্য আকাশে সৌন্দর্যের চাঁদ দেখা যায়”। অথচ পশ্চিমা উদারতা আর অভূতপূর্ব ব্যাক্তি স্বাধীনতা আর উন্নতির সিঁড়িগূলো যেন অশান্তির ক্লেদার্ত গ্লানিতে পরিপূর্ন।
বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতি যে দিকে মোড় নিচ্ছে তা হয়তো হবে ভয়ানক এবং বিশ্ব প্রগতির অন্তরায়। কিন্তু পশ্চিমা রাজনৈতিক এবং সমরনৈতিক নেতৃবৃন্দের সেইদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। উদারতা আর রাষ্ট্রীয় অখন্ডতার দোহাই দিয়ে পরিস্থিতিকে আরো বিপদজ্জনক করে যাচ্ছে। পশ্চিমা উদরনীতির যাঁতাকলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিধ্বংশী নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিতে তেমন কোন উল্লেখজনক বিপর্যয় ঘটাতে পারেনি বরং সাড়া ইউরোপে নিয়ে এসেছে প্রবল অর্থনৈতিক সুনামী। তচনছ হয়ে যাচ্ছ ইউরোপীয়ান আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি। শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই বৃটেনের অর্থনীতি বড় ধরনের ধ্স থেকে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের যথাসময়ে হস্তক্ষেপের কারনে কোন রকমে রক্ষা পায়। তারপরেও ইউকের অর্থনীতি থেকে ৫০০ বিলিয়ন পাউন্ড উধাও হয়ে যায়। পাউন্ড আর ইউরো একেবারে ধরাসায়ী। তারপরেও উন্মাদনার কমতি নেই। এই হলো উদারতাবাদের মহা আশক্তি। আর এই ভয়ানক আশক্তিই একের পর এক তচনছ করে দিয়েছে ইরাক, লিবিয়া, আফগানিস্থান আর সিরিয়ার মতো পৃথিবীর নানা দেশ এবং অঞ্চল যা বিষাক্ত থাবায় নিষ্পেষিত হতে চলেছে ইউরোপের সর্ববৃহৎ দেশ ইউক্রেইন। তবে এবার পশ্চিমা উদারতাবাদের উপ চ্যালেন্জ ছুড়ে দিয়েছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ দেশ এবং আরেক পরাশক্তি রাশিয়া।
২০১৪ সালের মার্চ মাসে ক্রিমিয়ার রাশিয়ান অধিভুক্তি এবং পূর্ব ইউক্রেনের সাথে সশস্ত্র যুদ্ধ ইউক্রেনীয় সমাজের মধ্যে বিদ্যমান গভীর বিভাজনের পাশাপাশি দেশের নতুন নেতৃত্বের অনিশ্চিত মনোভাব ছিল শান্তির প্রতিকুলে, যা পশ্চিমা স্বার্থের সাথে ছিল সংযুক্ত। ইউক্রেনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের কারনে ইউরোপের ভবিষ্যত এবং বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে নতুন করে ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। ইউক্রেনের সঙ্কট কেবল পশ্চিমা উদারনীতির ব্যর্থতার উপরই বর্তায়নি বরং একমুখী বিশ্বে বসবাসের বিপদজ্জনক অবস্থানকেই জানান দেয়। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সংমিশ্রণ ছিল ইউক্রেনের সংকটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্রদের প্রতিক্রিয়া। ক্রিমিয়া এবং পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার কার্যকলাপের জন্য রাশিয়াকে কোনঠাসা করে তার অর্থনীতিকে ধ্বংশ করার নিমিত্তে মরিয়া হয়ে উঠে এবং কিয়েভে সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন প্রদর্শন করে। শুরু থেকেই, পশ্চিমাদেশগুলির সার্বিক কার্যকারিতা নিয়ে ব্যাপক সংশয় ছিল এবং অনেকের দ্বারাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়। নিষেধাজ্ঞাগুলি অকার্যকর হওয়ার জন্য সমালোচিত হয়েছে এবং অনেকেই বিশ্বাস করে যে সদিচ্ছার অভাবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাগুলিও ব্যর্থ হবে। এই নিবন্ধে আমি আলোকপাত করার চেষ্টা করবো যে ইউক্রেনে পশ্চিমাদের উদারপন্থী ব্যবস্থা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে এবং এই সংকট এইটাই প্রমান করে যে এই ধরণের উদারনীতির ব্যাবস্থা জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না, তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। । আমি যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করবো যে এই ইউক্রেইন সংকট থেকে এটা সহজেই অনুধাবন করা যায় যে একটি ভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে।
এছাড়াও অনেক ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত এ উদারতাবাদের নীতি এবং নানা সময়ে সমালোচিত হচ্ছে উদারপন্থীদের অসাধু অর্থনৈতিক নীতির। সমালোচকরা বিশ্বাস করেন যে এই নীতিগুলির ফলে বিশাল জনসংখ্যাকে পিছনে রেখে সম্পদ এবং ক্ষমতার কেন্দ্রীভূত হয়েছে কয়েকজনের হাতে। কিছু বিশ্লেষক ইউক্রেন সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে যুক্তি দিয়েছেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবাধ অর্থনৈতিক নীতিগুলি এই অঞ্চলের বর্তমান অস্থিতিশীলতার জন্য দায়ী। সমালোচকরা দাবি করেন যে ইইউ-এর উন্মুক্ত-সীমান্ত নীতিগুলি অলিগার্খ এবং অন্যান্য দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ইউক্রেনের সম্পদ লুট করতে সক্ষম করেছে, যা দেশটির বর্তমান আর্থিক বিপর্যয়ে অবদান রাখছে। উপরন্তু, নব্য উদার অর্থনৈতিক পরিবর্তনের উপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের জোরাজুরি ব্যাপক দারিদ্র্য এবং সামাজিক বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে। নভেম্বর ২০১৩ সালে, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে একটি অ্যাসোসিয়েশন চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেছিলেন, যা ইউক্রেনের সঙ্কটের জন্ম দেয়। এর ফলে বিক্ষোভ দেখা দেয়, যা শেষ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ বিপ্লবে পরিণত হয়। পশ্চিমাপন্থী নতুন সরকার দ্রুত ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর সাথে মিত্রতার আগ্রহ পোষন করায় রাশিয়া অসন্তুষ্ট হয় এবং পরবর্তী ঘটনা দ্রুত বিবর্তিত হতে থাকে যার পরিনতি বর্তমান সংকট। পশ্চিমা উদারনীতি যে কতোটুকু ত্রুটিপূর্ন তা ইউক্রেইন সংকট থেকেই অনুধাবন করা যায়। প্রথমত, পশ্চিমারা তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সামরিক পদক্ষেপ নিতে অনিচ্ছুক। যেহেতু রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করেছে এবং পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের অর্থায়ন করেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ছাড়া সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয় নি। কারন একটি পরাশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিনতি হবে ভয়ানক। এমনকি ইউক্রেইনকে ভারী অস্ত্র দিতেও রাজী হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের এই মনোভাব সার্বিয়ার মন্টিনিগ্রো দখলের জন্য ২০০৮ সালের ন্যাটোর প্রতিক্রিয়ার সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে বলেছিলেন যে কসোভোর স্বাধীনতা যদি বৈধ হয়, তাহলে আবখাজিয়া এবং দক্ষিণ ওসেটিয়ার স্বাধীনতাও বৈধ। উদারতাবাদের এই দ্বৈত দার্শনিক পদ্ধতি সত্যিই ভয়ানক এবং ভঙ্গুর।
অসংখ্য পন্ডিত ইউক্রেন সংকটের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মনোভাবের সমালোচনা করেছেন দৃঢ় ভাবে যেমন নোয়াম চমস্কি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জন মারশেইমার, সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন। অনেকের মতে ইইউ ইউক্রেনের নিওলিবারেল অর্থনৈতিক সংস্কারকে সমর্থন করার কারনে দেশটিকে গুরুতর দারিদ্র্য, দূর্নীতিগ্রস্থ এবং সামাজিক অবিচারের দিকে পরিচালিত করছে। ইউক্রেনীয় সংকট পশ্চিমা উদারনৈতিকতা এবং রাশিয়ান রক্ষণশীলতার মধ্যে গভীর মতাদর্শগত ব্যবধানকে তুলে ধরেছে স্বচ্ছভাবে। পশ্চিমারা রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়া সত্ত্বেও, সমালোচকরা ইইউকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রচার এবং প্রসারকে ভন্ডামী ও উন্মাদনার সাথে তুলনা করেছেন। পশ্চিমাদের দ্বারা প্রচারিত গণতান্ত্রিক এবং স্বাধীনতাবাদী আদর্শগুলি ইউক্রেনের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের প্রতিকুলে ছিলনা যেখানে বছরের পর বছর দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসন ক্ষমতার শিখরে ছিল। উদারতাবাদের সমসাময়িক বৈশিষ্ট্য গুলির কারনে অনেক সমালোচকরা মনে করেন যে উদারতাবাদ সাধারণ কল্যাণের মূল্যে ব্যক্তি স্বাধীনতাকে অত্যধিক মাত্রায় উন্নীত করে। তাদের বক্তব্য হলো উদারতাবাদ ঐতিহ্যগত মূল্যবোধ এবং সামাজিক সংহতিকে দুর্বল করে এবং আত্মকেন্দ্রিক, বস্তুবাদী ভোগবাদকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে।
উদারতাবাদকে একেবারেই উড়িয়ে দেওয়ার ধৃষ্টতা আমার নেই। মানবিক উন্নতি এবং প্রগতির ধারাকে অব্যহত রাখার জন্য পশ্চিমা উদারতাবাদ অনুকুল ভূমিকা রাখছে নিঃসন্দেহে। তবে উদারতাবাদের নামে, ব্যাক্তি স্বাতন্ত্র কিংবা গনতন্ত্র, স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্বের লাগমহীন প্রচার এবং প্রসারকে মন্থর করতে হবে, অন্যদেশের উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার মনোভাবকে দমাতে হবে এবং বিশ্বব্যাবস্থায় রাজনৈতিক এবং সামজিক বলয়ে বহুমূখীতার প্রয়োগ বাড়াতে হবে। এ মুহুর্তে সমাজতান্ত্রীক সুষম সামাজিক ব্যাবস্থাকে জোরপূর্বক এক দীর্ঘ পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ভেঙ্গে দেওয়ার ফলে যে অস্থিতিশীল বিশ্ব সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাকে মোকাবেলা করার মতো কোন সুস্থ সামাজিক দর্শন গড়ে উঠেনি, যার ফলে উদারতাবাদের উশৃংঙ্খল উন্মাদনার দ্বীপ্ত দাহনে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষদেরকে আরো কিছুদিন দগ্ধ হতে হবে। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ইউক্রেইনের সংকট এবং রাশিয়ার গগনচুম্বী পর্বতসমান দ্বীপ্ত কঠোর মনোভাব কিছুটা হলেও এমিবার মতো বেড়ে উঠা পশ্চিমা উদারতাবাদকে স্তিমিত করতে সক্ষম হবে এবং তৈরী হবে এক নতুন বিশ্ব ব্যাবস্থা।