ভারতের বিহারের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্রাচীন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়, যা জ্ঞান ও সংস্কৃতির এক অনন্য তীর্থস্থান হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছিল, তার শিক্ষাদর্শন আজকের বিশ্বেও গভীরভাবে প্রাসঙ্গিক। আমরা আজ এমন এক সময়ে বাস করছি যখন প্রযুক্তি এবং বিশ্বায়নের প্রভাবে শিক্ষাব্যবস্থায় এক আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। আজকের প্রজন্ম অত্যন্ত প্রযুক্তিনির্ভর এবং দ্রুতগতির, যেখানে তথ্যের সহজলভ্যতা ও ডিজিটাল মাধ্যমের প্রভাব সর্বত্র বিরাজমান। কিন্ত এতো পরিবর্তন আর অগ্রগতির মধ্যেও গুনগত মানের শিক্ষা ব্যাবস্থার অভাব সর্বত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। অর্থনৈতিক সাফল্যই যেন বর্তমান শিক্ষার মূল মন্ত্র। আর এই কারনেই সমাজের নানা ক্ষেত্রে নেমে এসেছে অনৈতিক কার্যকলাপ ও দূর্বৃত্তায়ন। শিক্ষা ব্যাবস্থাকে সমাজমূখী ও নৈতিক মূল্যবোধের বাতাবরনে সাজাতে হলে একবার ফিরে তাকাতে হয় পঞ্চম শতাব্দীতে স্থাপিত প্রাচীন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যাবস্থার দিকে। নালন্দার শিক্ষাদর্শন আর চিরন্তন মূল্যবোধের কারণে আজও প্রাসঙ্গিক। নালন্দা কেবলমাত্র জ্ঞান বিতরণের কেন্দ্রস্থল ছিল না, ছিল একটি মহাবিশ্ব যেখানে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি গভীর চিন্তা, সৃজনশীলতা, নৈতিকতা ও গবেষণার বিকাশ ঘটাতো, যা আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে অত্যন্ত প্রয়োজন। এই প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদর্শন কেবল অতীতের উত্তরাধিকার নয়, বরং এটি বর্তমান ও ভবিষ্যতের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি পথপ্রদর্শক হতে পারে, যা আমাদের সমাজকে আরও নৈতিক, মানবিক, এবং সৃজনশীল করে তুলতে সহায়ক হবে। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়, যা প্রাচীন ভারতের গৌরবময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম, বিশ্বজুড়ে শিক্ষা দর্শনের একটি মূর্ত প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শৈল্পিক পরিবেশ ও শিক্ষাব্যবস্থা প্রাচীন ভারতের বৈদিক শিক্ষা ও বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত ছিল। আজকের এই লেখাটিতে নালন্দার শিক্ষা দর্শনকে নিয়ে আলোকপাত করবো। বিশেষ করে আজকের তথ্যপ্রযুক্তির অভাবনীয় বিকাশের যুগে প্রাচীন নালন্দার শিক্ষা দর্শনের কিছু কিছু দিক কেন খুবই প্রাসঙ্গিক তার একটা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করবো।
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়টি গুপ্ত সাম্রাজ্যের সময় সম্রাট কুমারগুপ্তের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রতিষ্ঠাকাল খ্রীষ্ট পূর্ব ৪২৭। প্রায় আটশত বছর ধরে এটি জ্ঞানচর্চার এক বিশাল কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। বিভিন্ন রাজা ও শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় নালন্দা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জ্ঞানপিপাসু শিক্ষার্থী ও পণ্ডিতদের আকর্ষণ করেছিল। নালন্দায় বৌদ্ধ ধর্ম, দর্শন, চিকিৎসাশাস্ত্র, জ্যোতির্বিজ্ঞান, গণিতসহ নানা বিষয়ে পাঠদান করা হতো, এবং এটি প্রাচীন বিশ্বের সর্ববৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিল প্রায় দশ হাজার শিক্ষার্থী এবং দুই হাজার অধ্যাপক, যা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশালত্ব ও গুরুত্বের প্রতীক। তবে, ১১৯৩ খ্রিস্টাব্দে নালন্দার এই গৌরবময় অধ্যায়ের এক দুঃখজনক সমাপ্তি ঘটে। তুর্কি সেনাপতি বখতিয়ার খিলজির নেতৃত্বে মুসলিম আক্রমণকারীরা নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করে দেয়। হাজার হাজার পুঁথি ও পাণ্ডুলিপি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার পুড়িয়ে ফেলা হয়, এবং বহু পণ্ডিত ও শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই ধ্বংসের ফলে নালন্দার জ্ঞানচর্চার ধারাবাহিকতা চিরতরে শেষ হয়ে যায়, এবং ভারতবর্ষ এক মহাজ্ঞানকেন্দ্রকে হারিয়ে ফেলে।
নালন্দার শিক্ষাদর্শনের মূল ভিত্তি ছিল জ্ঞান অন্বেষণ এবং নতুন ধারণার সৃজন। এখানে শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র তত্ত্বগত শিক্ষা দেওয়া হতো না, বরং তাদের গবেষণার মাধ্যমে চিন্তা করার ক্ষমতা এবং সৃজনশীলতা বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দেওয়া হতো। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের আত্মনির্ভরশীলভাবে চিন্তা করতে এবং বিভিন্ন বিষয়ে গভীরভাবে অনুসন্ধান করতে উৎসাহিত করতেন। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জ্ঞানসাধনার জন্য একটি প্রাণবন্ত কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল, যেখানে যুক্তি, যুক্তিবাদ, এবং তর্কবিতর্কের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করা হতো। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি বৈশিষ্ট্য ছিল তার আন্তর্জাতিকতা। নালন্দায় শুধুমাত্র ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকেই শিক্ষার্থী আসতো না, বরং চীন, তিব্বত, কোরিয়া, জাপান, এবং মধ্য এশিয়া থেকেও জ্ঞানপিপাসু শিক্ষার্থীরা আসত। এই বৈশ্বিক পরিবেশের মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটত এবং নতুন জ্ঞানের আদান-প্রদান হতো। নালন্দার শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল বহুমুখী, যেখানে বৌদ্ধ ধর্ম, হিন্দুধর্ম, এবং অন্যান্য ধর্ম ও দর্শনবিষয়ে সমান গুরুত্ব দেওয়া হতো। এই বৈচিত্র্যপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা ছাত্রদের মধ্যে সহনশীলতা, সমানাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, এবং বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি সহমর্মিতা গড়ে তুলতে সহায়তা করতো। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদর্শন কেবলমাত্র একাডেমিক শ্রেষ্ঠতা অর্জনের দিকে মনোনিবেশিত ছিল না, বরং একটি সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। এখানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা, সততা, এবং মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটানো হতো। নালন্দার শিক্ষা পদ্ধতিতে মানবতা, ন্যায়বিচার, এবং সমানাধিকারের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হতো, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি সুদৃঢ় নৈতিক ভিত্তি গড়ে তুলতে সহায়তা করত।
নালন্দার শিক্ষাদর্শন বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি আদর্শ মডেল হতে পারে। আজকের যুগে যেখানে জ্ঞান ও প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে, সেখানে নালন্দার মতো একটি স্থিতিশীল এবং নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা দর্শন শিক্ষার্থীদের মধ্যে চিন্তা করার ক্ষমতা, সৃজনশীলতা, এবং মানসিক স্থিতি গড়ে তোলার দিকে বিশেষ যত্নশীল, যা শিক্ষার্থীদেরকে একটি সুস্থ এবং সাফল্যমণ্ডিত জীবন বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। নালন্দার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে একটি সুশৃঙ্খল, নৈতিক, এবং সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তোলার সম্ভাবনা অনস্বীকার্য, যা সমগ্র বিশ্বের জন্য এক উদাহরণ হতে পারে। যদিও সময়ের বিবর্তনের ধারায় বিশ্ব অনেক পরিবর্তিত হয়েছে, প্রযুক্তি ও বিশ্বায়নের ফলে আমাদের জীবনধারা ও শিক্ষাব্যবস্থায় এসেছে আমুল পরিবর্তন, সমাজ ব্যাবস্থায় নেমে এসেছে এক অভিনব নতুন মাত্রা কিন্তু আমাদের স্বীকার করতেই হবে যে এই পরিবর্তনের ধারায় সমাজ ও রাষ্ট্রীয় ব্যাবস্থায় নেমে এসেছে ভারসাম্যহীনতা । সমাজের নানা ক্ষেত্রে নেমে সেছে দূর্বৃত্তায়ন ও অনৈতিকতা। আর উন্নতমনের মূল্যবোধভিত্তিক শিক্ষ ব্যাবস্থাই পারে সমজের মেরুদন্ডটাকে শক্ত করতে। আর এই কারনেই নালন্দার প্রাচীন শিক্ষাদর্শন আজকের যুগেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। বর্তমান প্রজন্ম প্রযুক্তিতে দক্ষ এবং বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সহজেই জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম। তবে, নালন্দার শিক্ষাদর্শন কেবলমাত্র তথ্য বা প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে নয়, বরং এটি চিন্তা, গবেষণা, এবং মানবিক মূল্যবোধের বিকাশের উপর গুরুত্ব দেয়, যা আজকের শিক্ষাব্যবস্থায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তবে যে সব কারনে নালন্দার শিক্ষা ব্যাবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ও প্রাসঙ্গিক তার মধ্যে একটি হলো জ্ঞান অনুসন্ধান এবং সৃজনশীলতা। বর্তমান সময়ে, যেখানে শিক্ষার্থীরা প্রচুর তথ্যের মুখোমুখি হচ্ছে, সেখানে কেবল তথ্য সংগ্রহ করাই যথেষ্ট নয়। বরং তথ্যের বিশ্লেষণ, বিচার এবং নতুন ধারণা তৈরি করার ক্ষমতা আরও গুরুত্বপূর্ণ। নালন্দার পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের চিন্তা করার ক্ষমতা এবং স্বতন্ত্রভাবে সমস্যার সমাধান করার দক্ষতা গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হতো, যা আজকের দ্রুত পরিবর্তিত বিশ্বে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
দ্বিতীয়ত, নালন্দার শিক্ষাদর্শন ছিল বৈচিত্র্য এবং সহনশীলতার উপর ভিত্তি করে। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে, যেখানে বিভিন্ন সংস্কৃতি, ভাষা, এবং ধর্মের মানুষ একসঙ্গে কাজ করছে পাশাপাশি, সেখানে সহনশীলতা এবং সমানাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নালন্দার বৈচিত্র্যময় শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন মতামত এবং সংস্কৃতির প্রতি সহানুভূতি ও সম্মান প্রদর্শনের মানসিকতা গড়ে তুলতে সহায়ক ছিল, যা আজকের বৈশ্বিক সমাজে অত্যন্ত মূল্যবান। তৃতীয়ত, নালন্দার শিক্ষাদর্শন নৈতিকতা এবং মানবিক মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে। আজকের প্রযুক্তিনির্ভর সমাজে, যেখানে মেশিন লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলছে, সেখানে নৈতিকতা এবং মানবিক মূল্যবোধের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নালন্দার শিক্ষা পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সততা, ন্যায়বিচার, এবং মানবতা গড়ে তুলতে সহায়ক ছিল, যা আজকের সমাজে একটি নৈতিক ভিত্তি গড়ে তুলতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, নালন্দার গবেষণার উপর জোর দেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীরভাবে চিন্তা করার এবং নতুন কিছু সৃষ্টি করার অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করত। আজকের যুগে, যেখানে সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবন অত্যন্ত মূল্যবান, নালন্দার শিক্ষাদর্শন শিক্ষার্থীদের চিন্তা করার ক্ষমতা এবং নতুন কিছু সৃষ্টির দিকে পরিচালিত করতে পারে। প্রযুক্তি যতই উন্নত হোক না কেন, মানুষের সৃজনশীলতা এবং চিন্তার গভীরতা কখনোই তার বিকল্প হতে পারে না। সর্বোপরি, নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদর্শন প্রাচীন হলেও, এর মৌলিক নীতি ও মূল্যবোধগুলি চিরকালীন এবং সর্বদা প্রাসঙ্গিক। আজকের প্রযুক্তি-প্রভাবিত বিশ্বে, নালন্দার শিক্ষাদর্শন একটি মজবুত এবং নৈতিক ভিত্তি প্রদান করতে পারে, যা শিক্ষার্থীদেরকে শুধু পেশাগতভাবে নয়, বরং সামাজিক এবং নৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনে সহায়ক হবে।
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন শিক্ষাদর্শন আজকের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মডেল হতে পারে. যা একটি ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠনে সহায়ক। প্রাচীনকালে নালন্দা শুধুমাত্র জ্ঞান অর্জনের কেন্দ্র ছিল না, বরং সেখানে বৈচিত্র্য, সমতা এবং মানবতার শিক্ষা দেয়া হতো। বিভিন্ন জাতি, ধর্ম এবং সংস্কৃতির শিক্ষার্থীরা এখানে একত্রে বসবাস করতেন এবং জ্ঞান বিনিময় করতেন, যা আজকের বৈশ্বিক সমাজের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বর্তমান সময়ে, যেখানে শিক্ষার লক্ষ্য প্রায়শই কেবলমাত্র পেশাগত দক্ষতা অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, সেখানে নালন্দার মত একটি চিন্তাশীল ও নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত জরুরি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে শুধুমাত্র তথ্য প্রদানকারীর ভূমিকা পালন না করে, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃজনশীলতা, স্বাধীন চিন্তা, এবং নৈতিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটানোর দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনে সহায়ক হবে এবং একটি নৈতিক ও মানবিক সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সরকারের জন্যও এই শিক্ষা দর্শনের গুরুত্ব অপরিসীম। নীতিনির্ধারকদের উচিত শিক্ষাব্যবস্থায় নালন্দার শিক্ষাদর্শনের মূল উপাদানগুলো অন্তর্ভুক্ত করা, যাতে শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র পেশাগত দক্ষতা অর্জন না করে, বরং তারা নৈতিকতা, মানবতা, এবং বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ওঠে। প্রযুক্তির উন্নতির পাশাপাশি, এই মূল্যবোধগুলি শিক্ষাব্যবস্থায় সংযুক্ত করলে একটি স্থিতিশীল এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে, যা ভবিষ্যতে জাতির উন্নয়নের জন্য এক দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় এই মডেলকে অনুসরণ করলে মানুষে মানুষে বিভেদ কমে আসবে, এবং ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠন সহজ হবে।