ভাষার মাসেই কেন শুধু মায়াকান্না

একুশ এলেই বাঙালীর প্রান কেঁদে উঠে। চারিদিকে কূঞ্চচূড়ার লালাগু মেখে নতুন করে সাঁজে ফুলেরা, প্রকৃতিতে হালকা মেজাজে বয়ে চলে বেদনার বিউগেল যেন জানান দিয়ে যায় তোমাদের আত্মত্যাগের মহিমা এখনো ধরে রেখেছি পরম মমতায়। বাংলা একাডেমী আর স্বাধীনতার মাঠ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বসে একুশের বই মেলা, হাজারো বাঙালীর পদচিহ্নে ভারী হয় প্রাঙ্গন। কি এক রমা রমা পরিবেশ, হাসি-কান্না-আনন্দের আর বেদনার। আমরা স্মরন করি বাংলার সে তাজা তরুনদের শ্রদ্ধা ভরে যারা নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে এনে দিয়েছিলো আমাদের কথা বলার অধিকার। ওদের আত্মত্যাগেই আমরা পেয়েছি একটি দিবস ২১শে ফেব্রুয়ারী খালি পায়ে প্রভাত ফেরীতে সামিল হওয়ার সুবর্ন সুযোগ। শহীদ মিনারের বেদীতে ফুলের তোড়া দিয়ে অর্ঘ দেওয়ার একটি কারন। মায়ের ভাষায় কথা বলার উদ্যাম উচ্ছ্বাস। কি এক স্বর্গীয় সুখানুভূতি। এই বিশেষ দিনটি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আমাদের মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের স্মরণ ও সম্মান জানানোর দিন। ১৯৫২ সালে সংঘঠিত ভাষা আন্দোলন ছিল একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা। যা বাঙালি জাতীয়তাবাদের সূচনা করেছিল এবং শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে স্বাধীনতার দিকে পরিচালিত করেছিল। তাই এই দিনটি বাঙালী এবং এই অঞ্চলের মানুষদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ন একটি দিন। এই দিনে, কেবল সেই সাহসী আত্মাদের স্মরণ করাই গুরুত্বপূর্ণ নয় যারা আমাদের জন্য লড়াই করেছিল, আমরা তাদের আত্মত্যাগের মূল্যকে কতোটুকু জাতী হিসেবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি তার সঠিক মূল্যায়ন হওয়াও জরুরী। শহীদদের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করাই জাতী হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব নয় কি? কিন্তু আমরা কি তা পেরেছি? শুধু একুশ আসলেই আমরা জেগে উঠি, চোখ ছল ছল করে প্রত্যয় আর শপথের বহ্নিশিখায়। কিন্তু একুশ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই আমরা আবার কুম্ভকর্নের ঘুমে লুটিয়ে পড়ি। থেমে যায় আমাদের উদ্যাম উচ্ছ্বাসের গতি। দেশ আর দেশের মানুষেরা আবারো এগুতে থাকে হ-য-ব-র-ল কর্মের সমীকরনে।

 

ভাষাগত স্বায়ত্তশাসনের প্রেক্ষাপটে এই দিনটি সমস্ত বাঙালীর একটি আত্মপরিচয়ের গর্বিত তিলক। হিরন্ময় গোধূলীর বাসন্তী হাওয়ার উদ্যাম উচ্ছ্বাস। স্বজন হারানোর ব্যাথায় অগ্নিগর্ভ প্রত্যয়ের অঙ্গীকার। সামাজিক বৈচিত্রকে সমুন্নত রেখে একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে মাতৃভাষাকে জাতীর সর্বস্তরে পুনরুজ্জীবিত করার প্রতিশ্রুতির দিন। একটি মহান অঙ্গিকার হিসেবে আমাদের চিন্তায়-চেতনায় ধারন এবং লালন করতে হবে এই দিনের মর্মবানীকে। করতে হবে তার সত্যিকারের বাস্তবায়ন। বিশ্বায়নের হিংস্র থাবায় ইংরেজির মতো আধিপত্যবাদী ভাষা আজ আগ্রাসনের মতো ছড়িয়ে পড়ছে সমাজের সর্বত্র এবং পরিকল্পিতভাবে দমন করা হচ্ছে আমাদের ঐতিহ্যগত সংস্কৃতিকে। আমরা যদি সত্যিকারের সন্মান দেখাতে চাই সেই শহীদদের যাদের আত্মত্যাগ আমাদের চলার পথকে করেছিলো কন্টকমুক্ত, এনে দিয়েছিল আমাদের ভাষায় কথা বলার অধিকার তা হলে শুধু মাত্র এই একুশের মাসেই মায়া কান্না নয়। চাই মাতৃভাষা ভিত্তিক একটি সামাজিক নবজাগরন। এক নতুন উদ্দীপনায় জেগে উঠতে হবে আপামর জনসাধারনকে। এই দিনটির মতোই সারা বছর যেন আমাদের চিন্তা-চেতনায়-মননে এবং সার্বিক কর্মকান্ডে প্রতিফলিত হয় মাতৃভাষার প্রতি আমাদের সামাজিক এবং নৈতিক কর্তব্যের দার্শনিক ভাবনা। এই বিশেষ দিনটিকেই উপলক্ষ্য করে আমাদের সকলকেই আরেকটি বিষয় মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন তা হল ভাষা অধিকার সম্পর্কে আমাদের সচেতনা বৃদ্ধি এবং আমাদেরকে সব ধরনের অশুভ বাক-বিতণ্ডার বাইরে থেকে আইন ও নীতি বাস্তবায়নের দিকে অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যে সকল নাগরিকের শিক্ষা ও সম্পদে সমান প্রবেশাধিকার রয়েছে এবং মাতৃভাষা ভিত্তিক একটি সময়োপযোগী শিক্ষা নীতি সর্বস্তরে বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন ছিল জাতীয় গর্বের উৎস। এই আন্দোলন বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করে। এই অঞ্চলে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের শুরু থেকেই বাংলা ভাষার স্বীকৃতি লাভের সংগ্রাম চলমান ছিল, কিন্তু এই ঐতিহাসিক ঘটনা পর্যন্ত তা বাংলাদেশের সংস্কৃতির একটি স্বীকৃত অংশ হয়ে উঠতে পারেনি। ১৯৪৮ সালে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার পাকিস্তান সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়। ছাত্ররা চেয়েছিল উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকেও সমান সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক, কিন্তু তাদের বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়। তুমুল প্রতিরোধ সত্ত্বেও ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাতে সমবেত হয়। শীঘ্রই তা রুপ নেয় সহিংসতায় যখন পুলিশ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালাতে শুরু করে। রচিত হলো বাংলার ইতিহাসের একটি কলংকময় অধ্যায়। কুখ্যাত পাকিস্তানি পুলিশের গুলিতে নিহত হয় কয়েকজন এবং আহত হয়েছে অনেকেই। এই ট্র্যাজেডিতে সারা বিশ্ব হতবাক, বিশ্ব সংবাদপত্রে হয়েছে শিরোনাম এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে দৃঢ়ভাবে। রাজনৈতিক দলগুলো জোট গঠন করে এবং পূর্ব বাংলা (বর্তমানে বাংলাদেশ) জুড়ে একাধিক শহরে ধর্মঘটের আয়োজন করে। অবশেষে, ব্যাপক প্রতিবাদ ও আইন অমান্য আন্দোলনের পর, ১৯৫৬ সালের ২৯শে ফেব্রুয়ারি উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে পাকিস্তানের দুটি জাতীয় ভাষার একটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

 

যদিও এই বিজয় বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জন্য একটি বড় মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত, কিন্তু একটি জাতী হিসেবে আমরা কি পেরেছি ২১এর চেতনাকে সমুন্নত রাখতে? ভাষাগত সমতা অর্জনের জন্য এখনও যে অনেক কাজ বাকি আছে। শুধু বাকীই নয় বরং বিদেশী ভাষার আগ্রাসন আর আমাদের নৈতিক অধঃপতনের কারনে মায়ের ভাষা আজ বিপদগ্রস্থ। এই ঐতিহাসিক ঘটনার সময় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের সম্মান জানাতে আমাদের অবশ্যই প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন দিবস উদযাপন চালিয়ে যেতে হবে যাতে এর উত্তরাধিকার চিরকাল বেঁচে থাকে। তবে ২১শের চেতনা যেন শুধু মায়া কান্নার মধ্য দিয়েই শেষ না হয়। অধিকন্তু, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে অবশ্যই মাতৃ ভাষা শেখানোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে যাতে আমাদের তরুণ প্রজন্ম তাদের নিজস্ব মাতৃভাষার চেতনায় বেড়ে উঠে। সাথে সাথে আমাদের অবশ্যই স্থানীয় উপভাষাগুলিকে রক্ষা করার জন্য সচেষ্ট হতে হবে। বাংলা ভাষা বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয় ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাংলাদেশের জাতীয় কর্মকাণ্ডের সকল ক্ষেত্রে নাগরিকদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বাড়াতে এর ব্যবহার করা উচিত। আমরা সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতি আহ্বান জানাই যেন বাংলা ভাষাকে দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনার অগ্রগতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে সংপৃক্ত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট বহু বছর ধরে ভাষা গবেষণার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভাষা গবেষণার প্রচার ও বিকাশের জন্য যথেষ্ট কাজ সম্পন্ন হয়নি।  ভাষা গবেষণা একটি জটিল ব্যাপার যার জন্য যথেষ্ট সম্পদ এবং দক্ষতা প্রয়োজন। বাজেটের সীমাবদ্ধতার কারণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের হাতে সীমিত সম্পদ রয়েছে তা অনস্বীকার্য। এই সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, এটি বছরের পর বছর ধরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ফলাফল তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু আশানুরুপ নয়। শিক্ষার সর্বস্তরে মাতৃভাষাকে এখনো পুরোপুরি সংপৃক্ত করা যায় নি। ইংরেজী মাধ্যম স্কুলগুলিতে বাংলা ভাষাকে নামেমাত্র পড়ানো হয়। ইংরেজী মিডিয়ামে পড়াশুনা শেষ করে বাংলার সন্তানেরা যখন বাংলায় পড়তে বা লিখতে পারে না সে লজ্জা কার? ২১শের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হলে আর দেরী না করে এখনই প্রয়োজন মাতৃভাষাকে সর্বস্তরে বাস্তবায়নের এক সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনষ্টিউট, বাংলা একাডেমী সহ অন্যান্য সমমনা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলা ভাষা গবেষণার প্রচার ও বিকাশের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ অবদান রাখতে পারে।

 

একটি সম্ভাব্য সমাধান হল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট সহ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে ভাষা গবেষণার সাথে জড়িত অন্যান্য সংস্থাগুলির মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলা। এই সংস্থাগুলির সাথে অংশীদারিত্ব গঠনের মাধ্যমে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং বিশ্বের অন্য কোথাও কথিত উপভাষা সহ ভাষাগত গবেষণায় দৃঢ়তার সাথে কাজ করে যেতে হবে। উপরন্তু, এই ধরনের অংশীদারিত্ব বিভিন্ন শাখার গবেষকদের মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতাকে সহজতর করতে পারে যারা ভাষা অধ্যয়ন বা সংরক্ষণ সম্পর্কিত প্রকল্পগুলিতে একসাথে কাজ করছে। সেইসাথে সীমান্তের ওপারে সমমনা সংগঠনগুলির মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। তবে সাথে সাথে এটাও স্বীকার করতে হবে যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা গবেষণার প্রচার ও বিকাশের জন্য যথেষ্ট সম্পদের প্রয়োজন; এবং বিভিন্ন শাখার গবেষকদেরে উত্সাহিত করা একান্ত জরুরী। যদি এই পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয় তবে বিশ্বব্যাপী আমাদের অনন্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটা অগ্রগতি দৃশ্যতঃ হবে। আমাদের চারপাশে প্রতিদিন প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ঘটছে, রেডিও/টেলিভিশন চ্যানেল, ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক ইত্যাদির মতো বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কার্যকরভাবে বাংলা প্রচারের জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের জন্য অপরিহার্য। সাথে সাথে প্রকাশক, বইয়ের দোকান, সংবাদপত্র এবং ম্যাগাজিনের মতো জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড়দেরকেও প্রচার কার্যক্রমে ওতোপ্রোতভাবে সংপৃক্ত করা উচিত।

একটি জাতির মধ্যে মাতৃভাষা প্রচারে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা অমূল্য। বুদ্ধিজীবীরা সমাজের প্রভাবশালী সদস্য যারা তাদের জ্ঞান এবং দক্ষতা ব্যবহার করে জনমতকে শিক্ষিত করতে, জানাতে এবং প্রভাবিত করতে পারেন। ভাষা, সংস্কৃতি এবং ইতিহাস সম্পর্কে তাদের অনন্য প্রজ্ঞার কারনে একটি জাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে সহায়তা করার পাশাপাশি তাদের স্থানীয় ভাষা সম্পর্কে লোকেরা যেভাবে চিন্তা করে তাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক ভূমিকা নিতে সক্ষম। বুদ্ধিজীবীরা এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন যাতে মাতৃভাষাগুলি দেশের সীমানার মধ্যে পাবলিক ডিসকোর্স, মিডিয়া কভারেজ এবং শিক্ষা পাঠ্যক্রমের অংশ থাকে। এছাড়াও, বুদ্ধিজীবীরা নিজের ভাষায় কথা বলার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রচারাভিযানে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হতে পারেন। বুদ্ধিজীবীদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে কোনো সংস্কৃতির মধ্যে এমন কিছু দিক রয়েছে যা শুধুমাত্র শব্দের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা যায় না; বরং, সেই সম্প্রদায়গুলির মধ্যে একটি শক্তিশালী উপস্থিতি থাকা দরকার। মাতৃভাষাকে জাতীর সর্বস্তরে পৌঁছানোর মাধ্যমেই একুশের চিরন্তন চেতনাকে সমুন্নত রাখা হবে আমাদের নৈতিক দায়ীত্ব এবং সেটাই হবে শহীদদের প্রতি সর্বোচ্চ সন্মান।

Leave your review